মোঃ আমিরুল হক ঃ “দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু, দেখা হয়নি চক্ষু মেলিয়া, ঘর থেকে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শীষের উপরে একটি শীশীর বৃন্দু। কবির এই অপরূপ বাণী থেকে বোঝা যায় আমরা যাই করি এটি অতিরঞ্জিত। আমরা যেন চোখ থাকিতেও অন্ধ। হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে প্রথিমা দর্শণে যাই দুর থেকে অনেক দুরে। অথচ আমাদের ঘরের পাশেই রয়েছে প্রায় শতবর্ষ ধর ধর একটি মন্দির। যেখানে গেলে আত্মতৃপতি ঘটে। সেটি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বাঘুটিয়ায়।
সরেজমিন ঘুরে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামে মৃত শ্রীযুক্ত বাবু অক্ষয় কুমার দাসের ছেলে শ্রী সুবোধ কুমার দাস ও শ্রী নিরোদ কুমার দাস এর বাড়ীর আঙ্গিনায় অবস্থিত দীর্ঘ আট যুগের ও বেশি সময় ধরে চলে আসা শ্রী শ্রী দূর্গা পূজা মন্দিরের পূজা উৎসব। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত দর্শণার্থী আসছে এই প্রায় শতবর্ষী দূর্গা মন্দিরে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারে তেমন জাকজমকপূর্ণতা নেই কারন, এবারে সারাবিশ্বে চলমান মহামারি করোনা। সরকার এর নির্দেশনা মেনে এবারের পূজা অর্চনা করতে হচ্ছে। আমরাও সরকারের নীতি নির্দেশনা মেনে শ্রী দূর্গা মায়ের পূজা করা হচ্ছে কথাগুলো বললেন মৃত শ্রীযুক্ত বাবু অক্ষয় কুমার দাসের ছেলে শ্রীমান সুবোধ কুমার দাস।
বাঘুটিয়া দাসবাড়ী শারদীয়া দূর্গা মন্দিরের সভাপতি শ্রী সুবোধ কুমার দাস ও তাঁর ভাই শ্রী নিরোদ কুমার দাস কলেন, আমাদের দাদু শ্রীযুক্ত বাবু চন্দ্র কান্ত দাসের আমল থেকে বাঘুটিয়া গ্রামের আমাদের বাড়ীতে পারিবারিক পূজা মন্দিরে দূর্গা পূজা করা হতো। বংশ পরমপরায় আমাদের বাবা শ্রীযুক্ত বাবু অক্ষয় কুমার দাসও এই মন্দিরে দূর্গা পূজা করতে থাকে। ধীরে ধীরে এই মন্দিরের পূজায় সার্বিকভাবে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় এলাকার অনেকেই। আমরাও সবার সহযোগীতায় আজ আট যুগের বেশি সময় ধরে এই মন্দিরে শ্রী শ্রী দূর্গা মায়ের পূজা করে আসছি। বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের এই পুরানা মন্দিরের পূজা দেখতে আসে অনেকেই। এখানে সরকারের তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে এই মন্দিরের যতটা উন্নয়ন সম্ভব তা করেছি। সরকার একটু নজর দিলে মন্দিরটি সুন্দর করে পরিপাটি করা যেতো। সুন্দর করতে পারলে এখানে আরো দর্শনার্থী ভীর জমাতো।
বাঘুটিয়া দাসবাড়ী মন্দির সম্পর্কে জানতে চেয়ে কথা হয় একই গ্রামের সোনামনি কিন্ডার গার্টেন এর অধ্যক্ষ শ্রী অখিল বন্ধু দাসের সাথে তিনি বলেন, আমি আমার জীবদ্দশায় এই মন্দিরে নিয়মিত শারদীয়া দূর্গা পূজা পালিত হয়ে আসছে। আর পূজা চলাকালীন সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত দর্শনার্থী এখানে পূজা দেখতে ভীর জমায়া। সেই সাথে দেখা হয় প্রায় শতবর্ষী মন্দিরটি। তবে এই বাড়ীওয়ালার একার পক্ষে মন্দিরটি পরিপাটি করা একেবারেই অসম্ভব। সরকার একটু সুনজর দিলে বাঘুটিয়ার এই মন্দিরটি হয়ে উঠতে পারে দর্শনার্থীদের পূর্ণস্থল।