স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাত্যহিক সমাবেশে “জয়বাংলা” শ্লোগান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম, আক্তার জাহান। তিনি বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের বকচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
বকচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, প্রাত্যহিক সমাবেশে নির্ধারিত শপথ বাক্য পাঠ শেষে রাষ্ট্রীয় শ্লোগান “জয়বাংলা” বলে শেষ করা হয়। প্রতিদিনের ন্যায় গত ২০ জুন সমাবেশ শেষে সমাবেশ পরিচালনাকারী পঞ্চম শ্রেণীর (২নং রোল) ছাত্র অনিক বিশ্বাস “জয়বাংলা” শ্লোগান দিতে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান, ওই ছাত্রকে “জয়বাংলা” বলতে নিশেধ করেন। তারপর থেকে আর সমাবেশে “জয়বাংলা” শ্লোগান হয়নি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ চঞ্চল শেখ বলেন, গত ২২ জুন বকচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় গত ২০ জুন সমাবেশ শেষে সমাবেশ পরিচালনাকারী পঞ্চম শ্রেণীর (২নং রোল) ছাত্র অনিক বিশ্বাস “জয়বাংলা” শ্লোগান দিতে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান, ওই ছাত্রকে “জয়বাংলা” বলতে নিশেধ করেন। তারপর থেকে আর সমাবেশে “জয়বাংলা” শ্লোগান হয়নি। তার এ অভিযোগের সাথে সকল শিক্ষক সত্যতা বলে প্রকাশ করেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়ায় গত ২২ জুন প্রধান শিক্ষক আকতার জাহানকে রাষ্ট্র ও সরকারী নির্দেশনা বিরোধী কাজ করায় কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না, তার সন্তোষজনক জবাব পত্রপ্রাপ্তির ৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ পত্রটি উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বকচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার জাহানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোন নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি। বিষয়টি জানতে শিক্ষা অফিসারকে বলা হলেও তিনি কোন চিঠি না থাকার অজুহাতে সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। ওই স্কুলের সভাপতির আত্বীয়স্বজন সব শিক্ষক হওয়ায় আমার কোন কমান্ড মানে না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তবে “জয়বাংলা” শ্লোগানের পর কি হবে না জানার কারণে বন্ধ করা হয়। বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল হক বলেন, নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পর প্রতিটি স্কুলের ম্যাসেঞ্জার গ্রæপে প্রদান করা হয়। ওই শিক্ষক যে অভিযোগ করেছেন জানানো হয়নি তা সঠিক নয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা বলেন, প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়ায় ওই শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। জবাব দেওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বকচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান, ইতিপুর্বে বহরপুর ইউনিয়নের নতুনচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পিটিয়ে ব্যাপক আলোচিত হন। তাকে গোয়ালন্দে বদলী করা হয়। কিছুদিন চাকুরী করার পর পুনরায় আবার বকচর যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।