সোহেল রানা : রাজবাড়ীতে জুট, হোগলা দিয়ে তৈরী পরিবেশ বান্ধব হ্যান্ডিক্রাফট ১৭টি দেশে রপ্তানী হচ্ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি নদীভাঙন এলাকার বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকায় ব্যবসার সুবাদে সেখানে হ্যান্ডিক্রাফটস কারখানা দেখে নিজের বাড়ীতে রাজবাড়ী হ্যান্ডিক্রাফটস লিমিটেড নামে একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভবদিয়া গ্রামের মোঃ সাত্তার মন্ডল বাবু।
এ কারখানায় তৈরী বাস্কেট, পাপোস, ফুলের টব, শপিং ব্যাগ সহ বিভিন্ন ধরণের পরিবেশ বান্ধব ব্যবহারযোগ্য উপকরণ তৈরী করছেন। তার কারখানায় বর্তমানে ১শত জন নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করছেন।
রাহেলা খাতুন নামে এক শ্রমিক বলেন, নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ঢাকায় গার্মেন্সে চাকুরী করতাম। এখানে হ্যান্ডিক্রাফটস ফ্যাক্টারী হওয়ায় গ্রামের বাড়ীতে এসে কাজ করছি। আগে ঢাকায় কাজ করে টাকা জমানো কষ্ট হয়ে যেত আর এখন বাড়ীতে ঘুমাই ও আয়ও বেশি। এতে পুঁজি দাড়াচ্ছে।
আলিম নামে এক শ্রমিক বলেন, আসলে আমরা যে কাজ করছি সবই বিদেশে চলে যাচ্ছে। এতে আমরা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। এ ভাবে প্রতিটি এলাকায় কারখানা গড়ে উঠা উচিত।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভবদিয়া গ্রামের মোঃ সাত্তার মন্ডল বাবু বলেন, ২০২১ সালে নিজের গ্রামের বাড়ীর ভবনের ছাদে হোগলা ও জুট দিয়ে গৃহস্থালী কাজের জন্য পরিবেশ বান্ধব হ্যান্ডিক্রাফট তৈরীর কাজ শুরু করেন। তবে সরাসরি ইমপোর্ট করতে পারেন না। বায়াররা যখন যে ধরণের মালের অর্ডার করেন তখন সেই মালই তৈরী করা হয়। এসব তৈরী মালামাল চায়না, নেদারল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডাসহ ১৭টি দেশে রপ্তানী করা হয়। জুট ও হোগলা দিয়ে তৈরী করায় সম্পন্ন পরিবেশ বান্ধব। বর্তমানে কারখানায় ১শত জন নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করছেন। শ্রমিকদের মাসিক বেতন ৮ হাজার টাকা থেকে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এখানে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত সামগ্রী তৈরী করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ নদী ভাঙ্গন কবলিত। অনেকে বেকার হয়ে ঢাকায় গার্মেন্সে চাকুরী শুরু করে। এদের মধ্যে অনেকেই এ কারখানায় কাজের জন্য ঢাকা থেকে গ্রামে চলে এসে কাজ করছেন। ১০জন শ্রমিক দিয়ে কাজ শুরু করা হলও এখন ১শত জন কাজ করছেন। আগে বাড়ীতেই কাজ করা হতো। এখন চাহিদার কারণে লোকবল বাড়াতে হচ্ছে এবং জায়গা কম থাকায় ৩টি স্থানে কাজ করানো হয়। নতুন করে চিন্তা ভাবনা করছি কারখানাটি বড় করতে হবে। যাতে এখানে এলাকার মানুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এ কারণে জমি সিলেক্ট করেছি, সরকারী ভাবে সহজশর্তে ঋণ পেলে আরও প্রসার ঘটানো সম্ভব। তিনি সকলকে হস্তশিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসার ঘটাতে ও বেকারত্ব দুরীকরণে এগিয়ে আসার আহবান জানান।