স্টাফ রিপোর্টার : কয়েকদিন ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। ফসলী চার-পাঁচ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করেছিলাম। নদী ভাঙনে আগে থেকে পদক্ষেপ নিলে আমাদের খুব ভালো হতো। আসলে পদ্মায় যখন ভাঙন শুরু হয়, তখনই বালুর বস্তা ফেলানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে নিচ থেকে যদি বালুর বস্তা ফেলানো হয় তাহলে আর ভাঙনের মুখে পড়ে না। আর এখন তীব্র স্রোতের কারণে উপরে বস্তা ফেলছে আর নিচ থেকে ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। এভাবে আর কতকাল চলবে। আমরা নদী ভাঙন এলাকার মানুষ সঠিক ভাবে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানাই। এ ভাবেই কথাগুলো ব্যক্ত করছিলেন পদ্মাপাড়ের আনোয়ার, সুজন, আকমলসহ অনেকে। রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করা ও তীব্র স্রোতের কারণে দেখা দিয়েছে ভাঙন। জেলা সদরের বড় চর বেনীনগর গ্রাম এলাকায় শহররক্ষা বাঁধের পদ্মার তীররক্ষা ব্লক ধ্বসে গেছে। ওই সব এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনরোধে পাউবোর উদ্যোগে শুধু বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, পদ্মার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে তীর সংরক্ষণের জন্য ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ছয়টি প্যাকেজ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বড় প্যাকেজের আওতায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় পদ্মার তীর সংরক্ষণ ও খনন করা হয়। কাজের ব্যয় ৩০৪ কোটি টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। তবে কাজটি ক্রয় করে মেসার্স দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড (ডিবিএল) কাজ করেন। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কাজ ২০২০ সালে সম্পন্ন করার কথা ছিল । পরে কয়েক দফা কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। গোদার বাজার এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকা সংস্কার কাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়। ব্যয় ধরা হয় ৭২ কোটি টাকা। চলতি বছরের ৩১ মে ৫টি প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে । চলতি বছরের জুনে কাজ বুঝে নেয় পাউবো।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ী উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বড় চর বেনীনগর গ্রামের তীররক্ষা প্রকল্পের ব্লক ধ্বসে গেছে। একটি রাস্তার কিছু অংশ নদীতে চলে গেছে। ব্লকের পশ্চিম দিকে বালুর টিউব ব্যাগ ফেলা হয়েছে। নতুন করে বালু আনা হচ্ছে। কয়েকজন শ্রমিক বস্তায় বালু তোলার প্রক্রিয়ায় যুক্ত রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল আমীন বলেন, চলতি বছরের জুন মাসে নদীর তীর রক্ষায় একটি বড় প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা নদীর পানির স্রোত বেড়ে যাওয়ার কারণে অসংখ্য ডুবোচর ও কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলানোর কাজ চলমান রয়েছে।