• মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০১:০০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজবাড়ীতে মাদ্রাসা ছাত্রীদের সাথে টিকটকের অভিযোগ বালিয়াকান্দিতে তিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জনসভা অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে আরো ২৭৭ পরিবার : সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান আপনারা চাইলে পূনরায় নির্বাচন করব : বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম, এমপি রাজবাড়ী শহরের ৪ হোটেল ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে জরিমানা পাংশায় জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহের উদ্বোধন কালুখালীর হাঁড়ীভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগীতা উদ্বোধন পাংশা উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত পাংশা সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন আ.লীগ সরকার সকল ক্ষেত্রেই উন্নয়ন করে চলছে : বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম, এমপি

অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেদকঃ / ৯ পোস্ট সময়
সর্বশেষ আপডেট সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একটা গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু সেটা পারবে না।
কাতার সফর নিয়ে সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে কেমন হয়, তা আমরা প্রমাণ করে দেখিয়েছি। এর মধ্যে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে। এগুলো মোকাবিলা করে আমরা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছি। মানুষের প্রতি যে কমিটমেন্ট আমাদের ছিল, সে জায়গায় অনঢ় ছিলাম বলেই উন্নয়ন করতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) স্বাধীন করে দিয়েছি। আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিয়েছি।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম নির্বাচন কমিশন করার জন্য আইন করে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সবসময় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে ছিল, আওয়ামী লীগই প্রথম নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, কমিশনকে অবাধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাদের নির্ভরশীলতা সরানো হয়েছে।
‘নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গভাবে স্বাধীন করে দিয়েছি। তাদের পুরোপুরি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করেছি।’
ইভিএম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে ওদের আপত্তি, তাই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। ওরা যতটুকু ভালো বুঝে তাই করবে। কারণ, কমিশনকে অবাধভাবে গড়ে তুলেছি। জনগণকে ভোটের অধিকার দিয়েছি, তারা যাকে খুশি ভোট দেবে।’
‘একটানা ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকার পরিচালনা করছি। দেশে স্থিতিশীলতা রাখতে পেরেছি। এর মধ্যেও কিছু অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। যেহেতু এত দীর্ঘ সময় ছিলাম, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।’
এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পালা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পালা। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটেছে। এখনো ঘটছে, এসবের জন্য সাময়িক সমস্যা হতে পারে। তবুও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সাময়িক কোন সমস্যা হলে জনগণ তা মোকাবেলা করবে। ১৯৭৫ এর পর এখন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা অনেক ভালো।
তিনি আরও বলেন, এখন ভোট চুরির সুযোগ নেই। ছবিসহ ভোটার তালিকা করেছি। সিল মেরে ব্যালট ভরার সুযোগও নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে কোভিড অতিমারি ও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য নেওয়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিশেষ প্রয়োজনের কথা তুলে ধরি।
এছাড়া বাংলাদেশসহ উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর উন্নয়ন অর্জনকে গতিশীল রাখতে বর্ধিত সময়ের জন্য এলডিসিদের জন্য প্রযোজ্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধের পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রমহান। মাত্র তিন বছর ৭ মাসে স্বল্পোন্নত দেশে গড়ে যান। এরপর অন্ধকার নেমে আসে। আমরা ২০০৮ নির্বাচনে যে রুপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি করতে সক্ষম হয়েছি। জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ, ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাতিসংঘের সদস্য দেশের স্বীকৃতি পায়। তার দেখানো পথ অনুসরণ করেই আমাদের সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের সকল মাপকাঠি পূরণ করতে সক্ষম হয়।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৪০ বিশ্বনেতার খোলাচিঠি ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় ছাপানোর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যিনি এতো নামিদামি তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাড দিতে হবে কেন। এটি আমার প্রশ্ন’।
সম্প্রতি শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলাচিঠি দিয়েছেন ৪০ বিশ্বনেতা।
গত মঙ্গলবার রাজনীতি, কূটনীতি, ব্যবসা, শিল্পকলা ও শিক্ষাক্ষেত্রের ৪০ বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই খোলাচিঠি দেয়। চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় পূর্ণ পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে।
৪০ বিশ্বনেতার মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে টেড কেনেডি জুনিয়রের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব।
কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ইউনুস প্রসঙ্গটি উঠে আসে। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এইটা ঠিক বিবৃতি না। এটা একটি অ্যাডভারটাইজমেন্ট। যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করেছে আমাদের বিশেষ একজন ব্যক্তির পক্ষে। এর উত্তর কী দেব জানিনা৷ আমার একটা প্রশ্ন আছে। আমার প্রশ্নটা হলো যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত তার জন্য এই ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে এডভারটাইজমেন্ট দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। এটাই আমার প্রশ্ন আর কিছু না। অ্যাড দিতে হলো কেন? প্রজ্ঞাপন কেন দিতে হলো?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিনিয়ত সমালোচনা শুনেই যাচ্ছি। আমরাই সুযোগ করে দিয়েছি। এর আগে তো এতো টেলিভিশন ছিল না, এতো রেডিও ছিল না। আমরাই সব উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ। দেশ বিদেশ থেকে বসে বসেও আমাদের সমালোচনা করে। আমাদের করে দেওয়া জিনিস দিয়ে আমাদের সমালোচনা করে। আবার শুনতে হয়- কিছুই করি নাই।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে যেটাই বলুক, আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে কিনা, দেশের মানুষের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ কর্তব্যবোধ আছে কিনা এটা দেখতে হবে। পরিকল্পিত উন্নয়ন করতে পেরেছি কিনা সেটা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে আমি এইটুকু দাবি করতে পারি, সেটা আমরা করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। ফলে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্বও আছে। মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাইনি, আমরা তাদের বলছি তাদের নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত নিতে। শুরুতে আমরা এককভাবে রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণ দিয়েছি। আমরা চাই, রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাক, সেখানে গেলে তাদের জীবন-জীবিকার সুযোগ হবে। রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বোঝা। কিন্তু আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন আমাদের দেশের এক কোটি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল।

সাধারণত কোনো দেশে সফর করে আসার পর সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সফর সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
গত ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী কাতার সফর শেষে দেশে ফেরেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ মার্চ কাতার সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কাতার সফরকালে প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি ইভেন্টে যোগ দেন। সেসব অনুষ্ঠানে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে কথা বলেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি, প্রবাসী শ্রমিকদের ইস্যুসহ দুই দেশের দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে আলাপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি, কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেইখা মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকার প্রধান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
খান মোহাম্মদ জহুরুল হক

সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ
রাজবাড়ী প্রেসক্লাব ভবন (নীচ তলা),
কক্ষ নং-৩, রাজবাড়ী-৭৭০০।

Contact us: editor@dailyrajbarikantha.com

প্রকাশনাঃ
সম্পাদক কর্তৃক বি এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়নবী সার্কুলার রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত এবং দক্ষিণ ভবাণীপুর, রাজবাড়ী থেকে প্রকাশিত।

মোবাইল- ০১৭১১১৫৪৩৯৬,
বার্তা বিভাগ- ০১৭৫২০৪০৭২০,
বিজ্ঞাপন বিভাগ- ০১৯৭১১৫৪৩৯৬

error: Sorry buddy! You can\'t copy our content :) Content is protected !!