স্টাফ রিপোর্টার : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাকে মৌলিক অধিকার হিসাবে বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছেন। বঙ্গবন্ধুই প্রথম ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারী নোয়াখালী জেলার চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে সর্বপ্রথম ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষের পূনবাসনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই পরিপেক্ষিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সাল থেকে এ লক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষে একজন মানুষও ভূমিহীন -গৃহহীন থাকবে না বলে ঘোষণা দেন। সারাদেশে মোট ২ লাখ ৩৫ হাজারের অধিক ঘর উপহার দেন।
সারা দেশের ন্যায় বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৪ টি পর্যায়ে ৫২০ টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী’র উপহার ২ শতাংশ জমিসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দেন। বালিয়াকান্দির উপজেলায় নির্মিত ৫২০ টি ঘরের মধ্যে নবাবপুর ইউনিয়নের ৯৫ টি, বহরপুর ইউনিয়নে ৬৫ টি, জামালপুর ইউনিয়নে ৮৭ টি, ইসলামপুরে ৯৪ টি, নারুয়া ৬৭ টি, জঙ্গল ইউনিয়নে ৪৭ টি এবং বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নে ৬৫ টি পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী’র উপহারের ঘর পেয়েছেন।
সরেজমিনে বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ইন্দুরদী আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অত্যন্ত সুন্দর একটি জায়গায় এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি অবস্থিত। উপজেলা সদরের একদম সন্নিকটে অবস্থিত, যার তিনদিক দিয়ে যোগাযোগের সড়ক রয়েছে। এ আশ্রয়ণে ৩০ টি পরিবার বসবাস করছেন। আশ্রয়ণের উপকার ভোগী ঝুমুর বলেন, শেখের বেটির মন অনেক বড়। বাপের মত তিনিও গরিব মানুষের খোঁজ রাখেন। আমি আগে আমার প্রতিবন্ধি সন্তানকে নিয়ে রেলের জায়গায় ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করতাম। এমন পাকা ঘরে ঘুমাতে পারবো, বিদ্যুতের আলো ঘরে জ্বলবে তা কখনো ভাবতে পারিনি। এটা শেখ হাসিনা’র জন্য সম্ভব হয়েছে। আমি তার জন্য মন থেকে দোয়া করি।
অন্যান্য পরিবারের সাথে আলাপকালে তারাও প্রধানমন্ত্রী’র প্রতি কৃতজ্ঞতা সহ একই অনুভূতি প্রকাশ করেন।
একই চিত্র দেখা যায় জামালপুর ইউনিয়নের রহমতপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ও আশ্রয়ণের উপকারভোগী বিউটি বলেন, আমি প্রতিবন্ধি। মা-বাবা কেউ নেই। বিয়ে হয় নাই। জামালপুর বাজারের পাশে ঝুঁপড়ি ঘরে থাকতাম। বাজারে কাজ করে খাইতাম। এমন ঘরে থাকতে থাকবো, স্বপ্নেও ভাবিনি। প্রধানমন্ত্রী’র উপহারের ঘর পেয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি।
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর বলেন, তার ইউনিয়নের ৪ টি পর্যায়ে ৯৫ টি ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী’র উপহারের ঘর পেয়ে এ অসহায় মানুষ গুলোর মুখে ফুটেছে হাঁসি। তারা সব সময় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এখানকার প্রত্যেকটি পরিবারের খোঁজ খবর আমি নিয়মিত রাখি। অনেক পরিশ্রমের ফসল আজকের এ সুন্দর আশ্রয়ণ প্রকল্প। এরা আমার আপনজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় ৫২০ টি পরিবার প্রধানমন্ত্রী’র উপহারের ঘর পেয়েছেন। ঘরগুলো পেয়ে এ অসহায় মানুষগুলো নতুন করে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পেয়েছেন। আমি সব সময় এ পরিবারগুলোর খোঁজ খবর রাখছি। আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের এ ৫২০ টি পরিবারের দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখছেন বলেও তিনি জানান।