সোহেল রানা : রাজশাহীতে বিএনপির জনসভায় প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি এবং উস্কানীমূলক ও মানহানীকর বক্তব্যে প্রদান করায় রাজবাড়ীর আদালতে বিএনপির ৫ নেতাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার মানহানী ও ডিজিটাল নিরাপত্বা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার দুপুরে রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন, কালুখালী উপজেলার মোহনপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু।
মামলার আসামীরা হলেন, রাজশাহীর চারঘাট থানার মাড়িয়া গ্রামের সাত্তার প্রামানিকের ছেলে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ আবু সাঈদ চাঁদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. নাদিম মোস্তফা সহ অজ্ঞাতনামা ২০-৩০জন।
মামলার বাদী ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু বলেন, তিনি ছাত্র জীবন থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে কাজ করতে করতে ২০০৫-২০১০ পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সুনামের সাথে সাংগঠনিক সকল দায়িত্ব কর্তব্য পালন করছেন। গত ১৯ মে বিকেলে রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে পুটিয়া শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে রাজশাহীর চারঘাট থানার মাড়িয়া গ্রামের সাত্তার প্রামানিকের ছেলে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ আবু সাঈদ চাঁদ সভাপতিত্ব করেন ও অন্যান্যরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বক্তব্যের শুরুতেই রাজশাহীর চারঘাট থানার মাড়িয়া গ্রামের সাত্তার প্রামানিকের ছেলে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ আবু সাঈদ চাঁদ বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা’ এমপি’র বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে জনগণের সামনে উস্কানীমূলক এবং মানহানীকর বক্তব্যে প্রদান করাসহ হত্যার হুমকি প্রদান করেন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সোহেল রানা টিপু বলেন, তার শেখ ফিলিং স্টেশনে বসে থাকা অবস্থায় অপধ্যাপক নজরুল ইসলাম খান, হারুন-অর রশিদ মানিক, বিএম এহতেশাম, এনায়েত শেখ উপস্থিতিতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স প্রচার মাধ্যম অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পেয়ে মর্মাহত ও আতঙ্কিত হন। এ বক্তব্যে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সহ জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র জীবনহানি ঘটার সম্ভাবনা সহ আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী আতঙ্কিত ভাবে জীবন যাপন করছেন। তার এ বক্তব্যে বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টিসহ দেশে অখন্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন ও বড় ধরণের নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটতে পারে যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। বর্তমানে রাস্তায় বের হলে মানুষ এ বিষয় নিয়ে হাস্যকর বক্তব্যে প্রদান করছেন এবং তার মানহানি করছেন এতে ২০ কোটি টাকার মানহানী হয়েছে। এ কারণে তিনি মামলাটি দায়ের করেছেন।
রাজবাড়ী বারের আইনজীবি রফিকুল ইসলাম ও জিপি আনোয়ার হোসেন বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন মামলাটি কালুখালী থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেছেন।