স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বাহাদুরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল ছাতা স্থাপনের নামে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার ইচ্ছামতো খরচ দেখিয়ে আত্নসাত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, গোয়ালন্দ উপজেলার বাহাদুরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে স্লিপ প্রকল্পের ৭০ হাজার টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৭০ হাজার টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭০ হাজার টাকা, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৭০ হাজার টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ পায়।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দের পুরোটাই খরচ দেখালেও ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন ব্যায় ১৫ হাজার টাকা, জাতীয় দিবসে পুরস্কার বই ৬ হাজার টাকা, বাগান তৈরী ৫ হাজার টাকা, ৪টি টেবিল ক্রয় ১২ হাজার টাকা, প্রিন্টার ক্রয় ১৪ হাজার টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে জাতীয় দিবসে পুরস্কার বই ক্রয় ৬ হাজার টাকা, ডিজিটাল হাজিরা মেশিন মেরামত ৩ হাজার টাকা, রাসেল বুক কর্ণার তৈরী ৭ হাজার টাকা, প্রজেক্ট মেরামত ১০ হাজার টাকা, ডেস্ক নেমপ্লেট ৫ হাজার ৬শত টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বাগান তৈরী ৪ হাজার টাকা, ল্যাপটপ মেরামত ৫ হাজার টাকা, শেখ রাসেল নামে ছাতা স্থাপন ১০ হাজার টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে করোনাকালীন জাতীয় দিবস পালনের ৬ হাজার টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে তবলা-হারমোনিয়াম মেরামত ৪ হাজার টাকা, দোলনা তৈরী ১৬ হাজার টাকা সহ বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্নসাত করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার।
সরেজমিন স্কুলে গিয়ে দেখাযায়, স্কুলে কোন বাগান নেই, নেই কোন দোলনা, শেখ রাসেল নামে ছাতা নেই, শিক্ষকদের ডেস্ক মেপ্লেট চোঁখে পড়েনি। স্কুলে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, আসলে কোথায় খরচ করেছেন সেটা প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি বলতে পারবেন। নেমপ্লেট ও শেখ রাসেল ছাতা স্থাপন কোথায় করা হয়েছে তারা বলেন আমরা কোনদিন দেখিনি কোথায় স্থাপন করেছেন। করোনাকালীন কোথায় কি করেছেন তিনি ভালো জানেন।
স্কুলের এসএমসির সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসলে স্লিপ প্রকল্পের যে কি কাজ হয়েছে, তা আমার জানা নেই। আমাদের সাথে কোন কথা বলে করেনি। তবে কাজ না করেই বিল তুললে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানাই।
স্কুলের এসএমসির সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আসলে কি কাজ করেছেন সেটা আমরা অবগত নয়। যে কাজ করার কথা তার বেশির ভাগ করেননি। কি কারণে করা হয়নি তাও আমাদের বোধগম্য নয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার বলেন, একাউন্টে ৩৫ হাজার টাকা রয়েছে। সভাপতি না থাকায় এখনো শেখ রাসেল ছাতা স্থাপন, বাগান করার কাজ করা হয়নি। তবে বিল তুলে একাউন্টে রেখেছেন। কমিটির সকল সদস্য অবগত রয়েছেন।
স্কুলের এসএমসির সভাপতি এ্যাড. মাহবুব বলেন, স্লিপ প্রকল্পের টাকার বিষয়ে অনিয়মের বিষয়টি অবগত। কি কাজ করেছে আমার জানা নেই। তবে কাজ করার কথা থাকলেও করেনি। এ বিষয়টি সদস্যদের হিসাব নেওয়ার কথা বলা হলেও তা হয়নি। ৫ বছর ধরে এ ভাবেই ইচ্ছামতো কাজ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাকে অবগত করেছিলেন স্লিপ প্রকল্পের টাকার কাজ এখনো পুরোটা হয়নি। পরে স্কুলে মিটিং করলেও আর অবগত করেননি। তবে বিল তুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।