• শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
উজানচর জামতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা রাজবাড়ীতে বিএনপি’র রোড মার্চ সফল করতে ছাত্রদলের ঘোষণা রাজবাড়ীতে ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) পালিত রাজবাড়ী মাটিপাড়া হোণ্ডাকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন দৌলতদিয়ায় ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে মিছিল আ.লীগ নেতা টিপুর উদ্যোগে কালুখালীতে প্রধানমন্ত্রী’র জন্মদিন পালিত দৌলতদিয়া থেকে ৫০ গ্রাম হেরোইনসহ ২জন গ্রেপ্তার কালুখালীর বোয়ালিয়া ইউনিয়ন আ. লীগের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত রামকান্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা রাজবাড়ীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত

গোয়ালন্দ সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমূল্য প্রসন্ন রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী

প্রতিবেদকঃ / ৮৫ পোস্ট সময়
সর্বশেষ আপডেট শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০২৩

॥ ফকীর আঃ কাদের ॥
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার বিপিন রায়ের পাড়া গ্রামের বাসিন্ধা স্বগীয় মতিলাল রায় ও স্বগীয় সুরধনী রায়ের জেষ্ঠ্য পুত্র অমূল্য প্রসন্ন রায়। তিনি ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। ২০২৩ সালের গত ২৫ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে বাড়ীর পাশে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। পানির তলদেশে তিনি শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেছেন। আমার শ্রদ্ধাভাজন গণিত বিষয়ের শিক্ষক অমূল্য প্রসন্ন রায় বিগত ১৯৭৬ সালের ২ এপ্রিল থেকে ২০০৬ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত গোয়ালন্দ নাজির উদ্দিন পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ভোলা জেলায় ২০০৬ সালের ২১ এপ্রিল তারিখে যোগদান করেন। ২০০৬ সালের ৪ জুলাই পর্যন্ত ভোলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে বদলী হয়ে গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ২০০৬ সালের ৫ জুলাই সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। কিছুদিনের মধ্যেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই বিদ্যালয় থেকেই ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করেন। শ্রদ্ধেয় অমূল্য স্যারের সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে, হাট-বাজারে দেখা হলেই তিনি আমার ও আমার পরিবারের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতেন। শুধু আমারই নয়, সকল প্রাক্ত শিক্ষার্থীদের পরিবার-পরিজনদের খোঁজখবর নিতেন। স্যারের এ অভ্যাসটি মায়া ভরা মুখে সবাইকে দেখা হলেই একই ভাবে খোঁজখবর নিতেন। এটা স্যারের বড় একটা গুন ছিল। আমি আমার পরিবার বর্গের সাথে ভারতে উন্নত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সময় গেদে বর্ডারে স্যারের সঙ্গে হঠাৎ করেই দেখা হয়। স্যারের সঙ্গে তার নিকটতম আত্বীয় ছিলেন। আত্বীয়কে বলেছিলাম, স্যার অসুস্থ, এ কারণে যত্ন করে নিয়ে যেতে অনুরোধ করি। এতে স্যার চরম ভাবে খুশি ও হাসতে থাকেন। এসব স্মৃতি আমার মনের মাঝে তারা করে নিয়ে বেড়াচ্ছে। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে গোয়ালন্দ বাজারে আবারও দেখা হয় স্যারের সঙ্গে। তিনি বললেন ভারতে কয়দিন ছিলা, কোথায় ছিলা, ডাক্তার দেখাতে পারছিলা কিনা। স্যারের কথার উত্তরে বলেছিলাম স্যার আপনি কোথায় ছিলেন। স্যার বললেন ভারতে আমার অনেক আত্বীয় স্বজন আছে। তাই থাকার কোন সমস্যা ভারতে আমার হয়নি। তারপর মাঝে মধ্যে গোয়ালন্দ বাজারে স্যারের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত হতো। সেই একই মায়া ভরে কথাবার্তা বলতেন। গত ২ বছর পূর্বে আমি আমার পরিবার নিয়ে শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, ঢাকা অঞ্চল, ঢাকা) সুলতান উদ্দিন আহমেদ অসুস্থ থাকায় দেখতে গিয়ে শুনতে পাই অমূল্য প্রসন্ন স্যারও অসুস্থ, পরে স্যারকেও দেখতে যাই। দু,জনের খোঁজখবর নেওয়াতে যেন তাদের অর্ধেক অসুস্থতা কমে যায়। ২০২৩ সালের ২৭ জুন স্যারের পৈতিক বাড়ীতে দেখা করতে গিয়েছিলাম। স্যারকে বললাম, স্যার আমি আপনার সঙ্গে একটা ছবি তুলতে চাই। হায়াৎ ময়ুতের কথা বলা যায় না, কে কবে মারা যাই। তখন স্যার, বললেন ঠিক আছে একটি গেঞ্জি গায়ে দিয়ে আসি। স্যারের সঙ্গে বারান্দায় সোফায় বসে ছবি তুললাম। সেই ছবি ও দেখা আমার স্যারের সঙ্গে শেষ দেখায় পরিনত হলো।
স্যার, একদিন আমার প্রাণ প্রিয় প্রতিষ্ঠান গোয়ালন্দ আইডিয়াল হাই স্কুলে ২০০৫ সালে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন মোঃ মশিউর রহমান (মুসা মাষ্টার)। আমার অফিসে এসে বসে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মেয়ে অন্তরাকে কোথায় ভর্তি করিয়েছো? আমি বললাম স্যার আমার স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। স্যার বললেন তোমার মেয়েকে ডাকো। স্যারের নির্দেশে স্কুলের পিয়ন হাবিবকে বললাম অন্তরাকে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে ডেকে নিয়ে আসো। তারপর স্যার আমাকে প্রশ্ন করলেন যে, তোমার স্কুলে বৃত্তি পাওয়া কয়জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। আমি বললাম স্যার আমার মা ছাড়া কেউ ভর্তি হয়নি। স্যার বললেন, তোমার মেয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে, ওর ক্লাসে কমপিটিশন করবে কার সাথে। ওরতো আগামীতে রেজাল্ট ভালো হবে না, তাই আমি ওকে নিয়ে গেলাম। আমি হতবাক হয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তখন আমি কিংকর্তব্য বিমুখ। হতবাক হয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না। স্যার আমার মাকে গোয়ালন্দ নাজির উদ্দিন সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করে নেন। এই হলো আমার স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। লেখক ঃ ফকীর আঃ কাদের, অধ্যক্ষ, এফকে টেকনিক্যাল এন্ড বিএম মহিলা কলেজ, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

error: Sorry buddy! You can\'t copy our content :) Content is protected !!