স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের মধুখালী থানা এলাকা থেকে মাথার খুলি ও বেশ কিছু খন্ডিত হাড়ের ডিএনএ পরীক্ষা শেষে লাশ সনাক্ত করে নির্মম হত্যাকান্ডের রহস্য উৎঘাটনসহ মুল দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে ফরিদপুর ডিবি পুলিশ।
শনিবার দুপুর ১টায় জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে হত্যার রহস্য উৎঘাটন ও আসামী গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান।
পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান বলেন, ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার খোর্দ্দমেগচামী খাসকান্দি গ্রামের আকিদুল মোল্যার ছেলে আল আমিন মোল্যা (১৭) নিখোঁজ হয়। এর প্রায় তিন মাস পরে পার্শবর্তী ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ছাইভাঙ্গার বিলের ধান ক্ষেত থেকে অজ্ঞাত একটি লাশের মাথার খুলিসহ কয়েক টুকরা হাড়গোর উদ্ধার করে মধুখালী থানা পুলিশ।
নিখোঁজ আলামিনের প্যান্টের বেল্ট দেখে ছেলের হাড়গোর বলে দাবী করেন তার পিতা। আকিদুল মোল্যা ২০২২ সালের ৩১ নভেম্বর বাদী হয়ে মধুখালী থানায় মামলা করেন। ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবে পিতামাতার ডিএনএ এবং উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে এবং উদ্ধার হওয়া আলামত তাদের ছেলের বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এ হত্যার রহস্য উৎঘাটন শেষে শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আসামী আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্য মতে শুক্রবার দিনগত রাত ২টার সময় অপর আসামী মনির শেখ কে বালিয়াকান্দি নিজ বাড়ী থেকে আটক করে ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
আসামীরা এ হত্যার কথা স্বীকার করে লোমহর্ষক ও নির্মম এ হত্যাকান্ডে ঘটনা বর্ণনা দেন। তারা জানান নিহত আলামিন ও আসামী আলমগীর একসাথে তাদের একালায় মিজানুর রহমান মিজানের মুরগির ফার্মে কাজ করতো। নিহতের পিতার সাথে ওই এলাকার কাছিম মোল্যার সাথে সুদের টাকা-পয়সা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিলো। অপরদিকে, মুরগির ফার্মের কিছু মালামাল চুরির ঘটনায় নিহত আলামিন জড়িত এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুরগি ফার্মের কর্মচারীদেরকে টাকা দিয়ে কাছিম মোল্যা অপর দুই সহযোগী আলমগীর হোসেন ও মনির শেখ সাথে নিয়ে আলামিনকে ধরে নিয়ে ছাইডাঙ্গা বিলের কাছে নিয়ে তাকে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য তার শরীর চাপাতি দিয়ে কয়েক টুকরো করে বস্তায় ভরে পাশের বিলের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায়।
প্রায় তিন মাস পরে বিলের পানি শুকানোর পরে স্থানীয়রা একটি ছেড়া বস্তায় মানুষের হাড়গোড় দেখতে পেয়ে পুলিশ কে খবর দেয়। এদের মধ্যে মুল পরিকল্পনাকারী কাছিম গ্রেপ্তারের পূর্বে মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহম্মদ আব্দুল্লাহ বিন কালাম, মধুখালী থানার ওসি মোঃ শহিদুল ইসলাম। পরে আসামীদের শনিবার ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়।